অনেক জনকে বলতে শুনি তিনি বাঁশ খেয়েছেন। আসলে কতটা সত্যি?
লেখা : সোলাইমান রানা
আজ বাঁশ খাওয়া নিয়ে বলা যাক। পার্বত্য চট্টগ্রামে (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি,বান্দরবান) বাঁশ খাওয়া একটা পরিচিতই খাদ্য।
“বাঁশের কোড়ল” একটি সুস্বাদু খাদ্য । ছোট ছোট বাঁশ যখন মাটি ভেদ করে সদ্য বের হয়,সেটাকেই বাঁশের কোড়ল বলে।
উপজাতিদের প্রধান খাবারের ভিতর “বাঁশের কোড়ল “অন্যতম। স্বাদে ভরা আর খাওয়ার উপযোগী হওয়ায় বাঙালিরদের ভিতর অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এখন।
বাঁশের কোড়লকে ভিন্ন জাতি ভিন্ন নামেই চিনে।
মারমা ভাষায় ‘মহ্হু’ । এিপুরা ভাষায় ‘মেওয়া’। আর চাকমা ভাষা ‘বাচ্চুরি’ বলা হয়।
“বাঁশের কোড়ল” বর্ষাকালে বেশি পাওয়া যায়। মাটি ভেদ করে বেশি জন্ম নেয় বর্ষাকালেই। মার্চ থেকে আগষ্ট পর্যন্ত বেশি পাওয়া যায়।
এইসময়ে সবচেয়ে বেশি সবজি বাজারে উঠে।
পাহাড়ে প্রচুর বাঁশ জন্মায় তাই সমতল এলাকা থেকে বেশিই পাওয়া সহজলাভ্য পাহাড়ি এলাকায়।
কয়েক জাতের বাঁশই হয় পাহাড়ি এলাকায়। মুলি বাঁশ, ডলু বাঁশ, বাজ্জে বাঁশ,মিতিঙ্গা বাঁশ এবং কালিছুরি বাঁশ।
খাবারে সবচেয়ে সুস্বাদু মুলি বাঁশ। পাহাড়ে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে প্রধান প্রিয় একটি খাবার “বাঁশের কোড়ল”
বাশঁ ঝাড় থেকে কেটে নিয়ে বাঁশের কোড়ল। প্রথমে তা পরিষ্কার করে ভিতরের নরম কোড়ল নিতে হয়।
পানিতে সিদ্ধ ভালো করে,
ঠান্ডা করে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হয়। তারপর পছন্দ মতো পুইশাক, শুটকি,মাংস দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।
শুটকি দিয়ে রান্না করার সময়, বেশি করে তেল দিয়ে তাতে পিয়াঁজ কুচি করে দিয়ে ভালো করে নাড়িয়ে নিন শুটকি সহযোগে । তারপরই বাঁশের কোড়ল গুলো দিয়ে দেন। মরিচ, হলুদ, মশল্লা ও লবন পরিমান মতো দিন। সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে দিয়ে আগুনে বসিয়ে রাখুন ৪০-৫০মিনিট।
আরো বেশি সুস্বাদু করতে চিংড়ি মাছ দিতে পারেন পিঁয়াজের সাথে।
মাংস দিয়ে একই রকমে রান্না করেও খেতে পারেন।
বাঁশের কোড়ল অনেক সুস্বাদু আর দেহের উপকারী তাই প্রত্যেকের খাওয়া উচিত একবার হলে। তাই চলে আসেন আমাদের পার্বত্য জেলা গুলোতে।